Purchase!

প্রেমের কবিতা

প্রেমের কবিতা পড়তে গিয়ে তো কান্নাও পেয়ে যায়। প্রেম তো কাঁদায়, বেদনার ভরপুর দীর্ঘশ্বাস দেয়। স্নিগ্ধা বাউলের প্রেমের কবিতা পড়তে গেলে বেদনা ও বিষাদের বাম্পার ফলন হয়। সে বিষাদ বনে—জঙ্গলে কিংবা কি—বোর্ডে, আঙুলে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে দাবানলের মতো-
আমার চোখগুলো অসহায়
হরিণের মতো দৌড়ে যায়
ম্যানগ্রোভের জলে!
By স্নিগ্ধা বাউল
Category: কবিতা
Paperback
Ebook
Buy from other retailers
About প্রেমের কবিতা
প্রেমের কবিতা পড়তে গিয়ে তো কান্নাও পেয়ে যায়। প্রেম তো কাঁদায়, বেদনার ভরপুর দীর্ঘশ্বাস দেয়। স্নিগ্ধা বাউলের প্রেমের কবিতা পড়তে গেলে বেদনা ও বিষাদের বাম্পার ফলন হয়। সে বিষাদ বনে—জঙ্গলে কিংবা কি—বোর্ডে, আঙুলে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে দাবানলের মতো-
আমার চোখগুলো অসহায়
হরিণের মতো দৌড়ে যায়
ম্যানগ্রোভের জলে!
-চকিত

হরিণের শরীরে নিজেকে এঁকেছিলেন ফ্রিদা কাহলো, সে ছবিতে তার হরিণ শরীর শরবিদ্ধ। আর স্নিগ্ধার কবিতায় দেখি তার চোখগুলো হরিণের মতো খোঁজে ম্যানগ্রোভ বন। কবি যখন প্রত্যাখ্যানের শরে আহত, রক্তাক্ত, তখন তার কবিতায়ও ঘটে রক্তক্ষরণ।
আমার অক্ষরগুলো প্রতিদিন
প্রত্যাখ্যাত হয়;
চিঠির বাহানায় আঙুলগুলো
রোদ পোহায় কি—বোর্ডে।
-অনাক্ষর

চোখে কি তবে কান্নাই ধরেন স্নিগ্ধা বাউল? তার কবিতা বোনা চোখে, তার কবিতার সিথানে পৈথানে কেবলই কি হাহাকার? কবেকার রাধিকার রান্নাবান্নার সঙ্গে, সিথানের বালিশও একাকার হয়ে যায়-
মন কান্দে
রান্দা বাডি শেষ কইরা চোখ কান্দে
এক লগে কান্দে সিথানের বালিশ।
-রূপকথা

প্রেমের কবিতায় তো শুধু বেদনা আর বিষাদ থাকে না, কাম ও উত্তেজনা, অবিশ্বাস ও প্রতারণাও জড়ো হয়। তুমুল ঝড়—হাওয়ার মতো স্নিগ্ধার কবিতায় তীব্রতর হয় প্রতারণার বিষ। সেই বিষ কেমন করে নিজেকেই প্রতারক করে তোলে। খদ্দের আর প্রেমিকের সীমানা ভেঙে যেতে থাকে ক্রমশ। মানুষের মন ভাঙে, সে ভাঙন নদীর দুই কূল ভাঙার চেয়ে কম জোরালো নয়।
প্রেমিক প্রতারক হলে
নিজেরে বেশ্যা মনে হয়
খদ্দের তবু টাকা দিয়ে কিনে
প্রতারক খায় অবিশ্বাসে...!
-ণ হন্যতে

কী তীব্র অবহেলা, অবসাদ, বিষাদ কবির চোখে সকল প্রেমিককে প্রতারক করে তোলে! প্রেমিকের প্রতারণা ঘৃণা নয়, বিবমিষা নয়, বিষাদ নয়, আরো বড় কোনো সিদ্ধান্তের দিকে ধাবিত করে কবি ও পাঠকের মন। স্নিগ্ধা বাউলের কবিতা পড়তে গিয়ে একজন পুরুষ হিসেবে আমার নিজের জন্য কষ্ট হয়, মায়া হয়। মনে হয় কৈফিয়ত দিয়ে বলি, জগতের সব প্রেমিক প্রতারক নয়। কিন্তু সে কথা কি কবির কানে যায়, যাবে? কবি যখন আহত, ব্যথিত, তখন তো গাছে গাছে, লতায়—পাতায় ছড়াতে থাকে নীল অপরাজিতা-
কেউ প্রেমিক হলে কেমন লাগে
মনে হয় জন্ম নিল আরেক প্রতারক!
-ঘুড্ডি

এসব কারণেই কি না কে জানে, শেষতক স্নিগ্ধা বাউল তার প্রেমের কবিতায় আমাদেরকেও আহত করেন। তার ইমেজের ব্যবহার, উপমার ব্যবহার, শব্দ নির্বাচন যেন কোনো এক আহত, বিক্ষত অভিধান থেকে উঠে আসতে থাকে ক্রমাগত। প্রেম যদিবা দু’কলম এগোতে নেয়, কাম তখন গ্রাস করে নেয় কবির আকাশ। আমার জানা নেই, পৃথিবীর আর কোনো কবি চাঁদের সঙ্গে উত্থিত শিশ্নের মিল খুঁজে পান কি না-
উত্তেজিত শিশ্নের মতো ধেয়ে আসছে চাঁদ
খুবলে খাবে অভুক্ত পাঁজর-
-আলোর বীজ

তবু ভুলে যাওয়া গন্ধের মতো কিছু আরাম, কিছু বিশ্রাম, কিছু আদরের কাতরতা খুঁজতে থাকি স্নিগ্ধার প্রেমের কবিতায়। আর পাতা উল্টাতে উল্টাতে শেষে এসে পেয়ে যাই পরম উচ্চারণের মতো সাবলীল প্রেম পঙক্তিমালা-
তিনশো তিপ্পান্ন দিবস তোমার থাক
আমায় দিও দ্বাদশ পূর্ণিমা দিন।
কৃষ্ণপক্ষের শুক্লপক্ষের নামে
আজীবন শোধিব তোমার ঋণ।
প্রতারণা, বিষাদ, বেদনার সব লেনদেন ফুরানোর পরও কবি নিজেকে নিবেদন করেন প্রেমিকের কাছে, শেষতক স্নিগ্ধার প্রেমের কবিতায় একটু প্রেমের আশ্বাস, আলিঙ্গন পেয়ে যাই আমি নাদান পাঠক।

মুম রহমান
Creative Dhaka
  • Copyright © 2024
  • Privacy Policy Terms of Use